পাঁচটি কালিমা ও অর্থ

 
পাচ কালিমা

ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস ও শিক্ষা বোঝার জন্য পাঁচটি কালিমা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই কালিমাগুলো মুসলিমদের ঈমান মজবুত করার জন্য পাঠ করা হয়। এখানে প্রতিটি কালিমা আরবি, উচ্চারণ ও বাংলা অর্থসহ দেওয়া হলো।
এই পাঁচটি কালিমা মুসলিম জীবনের মূল শিক্ষা ও ঈমানের ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। এগুলো মুখস্থ করা এবং নিয়মিত পাঠ করা একজন মুসলমানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ।


১/ কালিমা তাইয়্যিবা


لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ مُحَمَّدٌ رَسُوْلُ اللّٰهِ

উচ্চারণ:
Laa ilaaha illallah Muhammadur Rasoolullah

বাংলা অর্থ:
"আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই; মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসূল।"

ফজিলত:
এই কালিমার মাধ্যমে একজন মুসলিম তাওহীদ ও রিসালতের স্বীকৃতি দেয়।
রাসূল ﷺ বলেছেন: "যে ব্যক্তি সত্য অন্তর দিয়ে لا إله إلا الله বলে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।" (সহীহ বুখারী)
এটি সমস্ত পাপকে মাফ করে দিতে পারে, যদি তা অন্তরের বিশ্বাস থেকে বলা হয়।


২/ কালিমা শাহাদাত


أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ

উচ্চারণ:
Ash-hadu an laa ilaaha illallah wahdahu laa shareeka lahu wa ash-hadu anna Muhammadan abduhu wa rasooluhu

বাংলা অর্থ:
"আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি এক, তার কোনো শরিক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ (সা.) তাঁর বান্দা ও রাসূল।"

ফজিলত:
একজন মুসলিমের মুসলিম হওয়ার ঘোষণা।
মৃত্যুর সময় এই কালিমা পড়তে পারলে জান্নাতের সুসংবাদ রয়েছে।
ফেরেশতাদের কাছে এই কালিমার সাক্ষ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।


৩/ কালিমা তামজীদ


سُبْحَانَ اللّٰهِ وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ وَلَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَاللّٰهُ أَكْبَرُ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللّٰهِ الْعَلِيِّ الْعَظِيْمِ

উচ্চারণ:
Subhaanallahi walhamdu lillaahi wa laa ilaaha illallaahu wallaahu akbar, wa laa hawla wa laa quwwata illaa billaahil 'aliyyil 'azeem

বাংলা অর্থ:
"আল্লাহ পবিত্র, সকল প্রশংসা আল্লাহর, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, আল্লাহ মহান। আল্লাহ ছাড়া কোনো উপায় নেই এবং কোনো শক্তি নেই; তিনি সর্বোচ্চ ও সর্বশক্তিমান।"

ফজিলত:
এটি আল্লাহর পবিত্রতা, প্রশংসা ও মহিমা ঘোষণা করা।
প্রতিটি বাক্য আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয় এবং তা মিজান (তুলা) ভারী করে।
দুঃখ-কষ্ট দূর করতে সাহায্য করে।


৪/ কালিমা তাওহীদ


لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِى وَيُمِيْتُ وَهُوَ حَيٌّ لَا يَمُوْتُ أَبَدًا أَبَدًا ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ بِيَدِهِ الْخَيْرُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ

উচ্চারণ:
Laa ilaaha illallahu wahdahu laa shareeka lahu, lahul mulku wa lahul hamdu, yuhyi wa yumeet, wa huwa hayyun laa yamootu abadan abada, zul-jalaali wal-ikraam, biyadihil khayr, wa huwa ‘ala kulli shay’in qadeer

বাংলা অর্থ:
"আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি একক, তার কোনো অংশীদার নেই। তারই রাজত্ব, তারই সমস্ত প্রশংসা। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু দেন। তিনি চিরঞ্জীব, কখনো মৃত্যু তাঁকে স্পর্শ করবে না। তিনি মহিমাময় ও সম্মানিত। সমস্ত কল্যাণ তাঁর হাতেই এবং তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।"

ফজিলত:
শিরক থেকে মুক্তি দেয় ও আল্লাহর একত্বের দৃঢ় ঘোষণা।
এটি বলা গুনাহ মাফের উপায় এবং জান্নাতের দরজা খুলে দিতে পারে।
সকালে ও সন্ধ্যায় ১০ বার বা ১০০ বার পড়া বিশেষ ফজিলতপূর্ণ।


৫/ কালিমা রদ্দে কুফর


اَللّٰهُمَّ إِنِّى أَعُوْذُ بِكَ مِنْ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ شَيْئًا وَأَنَا أَعْلَمُ بِهِ، وَأَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لَا أَعْلَمُ بِهِ، تُبْتُ عَنْهُ وَتَبَرَّأْتُ مِنَ الْكُفْرِ وَالشِّرْكِ وَالْكِذْبِ وَالْغِيبَةِ وَالْبِدْعَةِ وَالنَّمِيمَةِ وَالْفَوَاحِشِ وَالْبُهْتَانِ وَالْمَعَاصِى كُلِّهَا، وَأَسْلَمْتُ وَأَقُوْلُ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ مُحَمَّدٌ رَسُوْلُ اللّٰهِ

উচ্চারণ:
Allahumma inni a'udhu bika min an ushrika bika shay'an wa ana a'lamu bihi, wa astaghfiruka lima la a'lamu bihi, tubtu anhu wa tabarra'tu minal kufri wash-shirki wal-kadhibi wal-gheebati wal-bid'ati wannameemati wal-fawahishi wal-buhtaani wal-ma'aasi kullihaa, wa aslamtu wa aqoolu laa ilaaha illallahu Muhammadur Rasoolullah

বাংলা অর্থ:
"হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই এই থেকে যে, কোনো কিছুতে আমি আপনার সাথে শিরক করি জেনে-শুনে, এবং আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাই সেই শিরকের জন্য যা আমি অজান্তে করেছি। আমি তার থেকে তাওবা করছি এবং কুফর, শিরক, মিথ্যা, গিবত, বিদআত, চোগলখুরি, অশ্লীলতা, অপবাদ ও সব ধরনের পাপ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হচ্ছি। আমি ইসলাম গ্রহণ করছি এবং সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসূল।"

ফজিলত:
শিরক থেকে আশ্রয় চাওয়ার মাধ্যমে ঈমানকে সুরক্ষিত রাখা।
গোপন বা অজান্তে করা শিরক থেকে মাফ চাওয়া হয়।
আল্লাহর কাছে বিনয় প্রকাশের চরম রূপ।

Post a Comment

Previous Post Next Post