প্রত্যেকেরই কোন না কোন সময় পেট ব্যাথা হয়। এই ব্যথার অনেক কারণ থাকতে পারে, যার মধ্যে একটি হল অ্যাপেনডিসাইটিস। আমাদের খাদ্যনালীতে ক্ষুদ্রান্ত্র এবং বৃহৎ অন্ত্রের সংযোগস্থলে একটি ছোট থলির মতো জিনিস থাকে। এটি অ্যাপেনডিসাইটিস। এপেন্ডিসাইটিসের মতো পেটের ডান পাশে শরীরের এই থলিতে খুব ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকে। তাই বাইরের ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরে সময়ে সময়ে আক্রমণ করতে পারে না।
বাইরের খাবার যখন আমাদের শরীরে প্রবেশ করে তখন তার সঙ্গে অনেক খারাপ ব্যাকটেরিয়াও প্রবেশ করে। তাহলে এই ভালো ব্যাকটেরিয়াগুলো খারাপ ব্যাকটেরিয়ার সাথে যুদ্ধ করে আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে। এটি অ্যাপেন্ডিসাইটিসের প্রধান কাজ। তৃণভোজী, বিশেষ করে গরুর তুলনায় পরিশিষ্টগুলো বেশ বড়। এটি মানুষের খুব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ নয়, তবুও 100 জনের মধ্যে 1 জন এটি থেকে অসুস্থ হয়। এই রোগটি বেশিরভাগই 10 থেকে 30 বছরের মধ্যে ঘটে।
অ্যাপেনডিসাইটিসের প্রথম এবং প্রধান উপসর্গ হল পেটে ব্যথা। এই ব্যথা সাধারণ পেটের ব্যথা থেকে একেবারেই আলাদা। এটি শুরু হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিত্সা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। অ্যাপেনডিসাইটিসের ব্যথার জন্য অস্ত্রোপচারের চিকিৎসা প্রয়োজন। অনেক সময় ব্যবস্থা না নিয়ে বিভিন্ন ব্যথানাশক বা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেয়ে এই ব্যথা ঢেকে দেওয়া হয়। এতে পরবর্তীতে রোগীর শরীরে মারাত্মক জটিলতা দেখা দেয়।
মানুষের কোলনের সাথে সংযুক্ত একটি ছোট আঙুলের মতো থলিকে অ্যাপেন্ডিক্স বলা হয়। এটি 2 থেকে 20 সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের হতে পারে। এটি তলপেটের ডান দিকে থাকে। এর সঠিক কার্যকারিতা এখনও অস্পষ্ট। কিন্তু এই ছোট থলির আকস্মিক প্রদাহ অসহ্য যন্ত্রণার সৃষ্টি করে। এর নাম অ্যাপেনডিসাইটিস
এই রোগের লক্ষণ কী?
অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথা সাধারণত পেটের নাভির চারপাশে বা নাভির ঠিক উপরে শুরু হয়। আস্তে আস্তে , পেটের নীচের ডানদিকে ব্যথা ছরাতে থাকে। বিরতিহীন ব্যথা গুরুতর বা হালকা হতে পারে। এ ছাড়া একবার বা দুবার বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে। হালকা জ্বর এবং পেট খারাপ হতে পারে। ব্যথা তীব্র হলে রোগীকে হাসপাতালে আসতে বাধ্য করা হয়। তবে হালকা ব্যথা হলেও সাবধান বলে ঢেকে দাওয়া হয়। পরবর্তীতে রোগীর অ্যাপেন্ডিক্সের চারপাশে বিভিন্ন পদার্থ জমে গিয়ে পেটে চাকা বা ফোঁড়া তৈরি হতে পারে। যদি সময়মতো অ্যাপেন্ডিক্সের চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে খাদ্যনালীর বিভিন্ন উপাদান, পরিপাক খাবারের অংশ এবং মল বের হয়ে সারা পাকস্থলীতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে পাকস্থলীর অভ্যন্তরে এমনকি রক্তেও মারাত্মক সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ ধরনের ক্ষেত্রে রোগীর জীবনও হুমকির মুখে পড়ে।
চিকিৎসা কি?
অ্যাপেনডিসাইটিসের চিকিৎসা হলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অস্ত্রোপচার করে আক্রান্ত অংশ বা অ্যাপেন্ডিক্স অপসারণ করা। অনেকেই অস্ত্রোপচারের ভয়ে হাসপাতালে যেতে চান না। অনেক সময় শিশু বা বয়স্করাও সঠিকভাবে ব্যথা বর্ণনা করতে পারে না। কিন্তু জটিলতা এড়াতে, পেটে ব্যথা তীব্র এবং অবিরাম বা ক্রমাগত থাকলে, রোগীকে শক্ত খাবার দেওয়া এড়িয়ে চলুন বা মুখ দিয়ে খাওয়ানো বন্ধ করুন এবং দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান।