হাঁস মুরগির ১০ টি রোগের লক্ষ্মণ ও ঔষধ

 সাধারণত হাঁস মুরগির এই ১০টি রোগ হয়ে থাকে এর বাইরে তেমন কিছুই হয় না এই ১০টি রোগের লক্ষ্মণ ও ঔষধ সম্পর্কে যদি আপনার জানা থাকে তাহলে আপনার হাঁস মুরগী লালন পালন করতে আর সমোস্যা হবে না, আপনারা অনেকেই মুরগি লালন পালন করেন কিন্তু রোগ নির্ণয় করতে পারেন না যার কারণে সঠিক ঔষধ না দেওয়ার কারণে মুরগিগুলো কিছুদিন পরে আস্তে আস্তে মারা যায়,  আপনার যে জাতের হাঁস মুরগি হোক না কেন  এই লক্ষণ গুলো দেখে রোগ সনাক্ত করে ঔষধ খাওয়াতে পারবেন।


ঠান্ডা ও জ্বর

১/ ঠান্ডা, জ্বর 

ঠান্ডা, সর্দি, জ্বার হলে মুরগী বা হাঁস ঝিমায় নাকে সর্দি থাকে, নাক চাপ দিলে পানি পরে শরির প্রচন্ড গরম থাকে, সাথে পায়খানা পানি পানি বা হলদে বর্নের হতে পারে, রানি খেতের সুচনা ঠান্ডা থেকে অনেক সময় হয়ে থাকে। 

পরিচর্যাঃ হাঁসের সাধারণত ঠান্ডা কমি হয় তবে বাচ্চা হতে ২১ দিন বয়স প্রজন্ত পানিতে দিবেন না ও শকনো যায়গায় রাখবেন। বিস্তারিত দেখুন... 

মুরগির খেত্রে ও শুকনো যায়গা বেছে নিবেন যদি দেশি মুরগি ছেরে পালোন করেন তবে খেয়াল রাখবেন বিষ্টি ও পানি কাদায় না ভেজে, আর যদি সোনালী বা টাইগার, লেয়ার পালোন করেন তবে ঘরটিকে ঠান্ডা মুক্ত রাখবেন, পায়ের নিচে যেন সেঁতসেঁতে ভাব না থাকে, কাঠের বা ধানের তুস ব্যাবহার করবেন।

ঔষধঃ নাপা, ডক্সি-ভেট, লাইসোভিট, এই ৩টি ঔষধ খাওয়াতে হবে ১লিটার পানিতে একটি নাপা ও ১গ্রাম ডক্সি-ভেট মিশিয়ে ৫থেকে ৬ ঘন্টা খাওয়াতে হবে, ৩ ঘন্টা সাদা পানি, এরপরে ১গ্রাম লাইসোভিট ১লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫/৬ ঘন্টা খাওয়াতে হবে, এভাবে ৫/৭ দিন খাওয়াতে হবে ( লাইসোভিট এর বিপরীতে এমাইনোভেট দিতে পারেন) 

নাপাঃ ঠান্ডার কারণে জ্বর আসে জ্বর কমাতে সাহায্য করে 

ডক্সি-ভেটঃ ঠান্ডা কমায়

লাইসোভিটঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বারায়

মুরগির রোগ ও ঔষধ

২/ চুনা পায়খানা 

চুনা পায়খানা হলে মুরগির বিষ্টা পতলা ও হলদে বর্নের হয় তবে সবুজ হয় না সবুজ হলে অন্য লক্ষন সেটা নিচে আলোচনা করা হবে, চুনা পায়খানা হলে মুরগী ঝিমায় 

ঔষধঃ চুনা পায়খানা হলে ওরস্যালাইন, রেনাময়সিন, লাইসোভিট ৩টি একসাথে খাওতে হবে প্রতি ১গ্রম পাউডার ১লিটার পানিতে মিশিয়ে দিনে ৬/৮ ঘন্টা খাওয়াতে হবে এভাবে ৫/৭ দিন খাওয়াতে হবে। 

ওরস্যালাইনঃ চুনা পায়খানা যেহেতু প্রাথমিক ডায়রিয়া তাই স্যালাইন দিতে হবে
রেনাময়সিনঃ চুনা পায়খানার ব্যাকটেরিয়া দুর করবে 
লাইসোভিটঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বারাবে



মুরগির রোগ ও ঔষধ

৩/ রক্ত আমাশা

রক্ত আমাশা হলে হাস মুরগির বিষ্টার সাথে রক্ত বের হয় ও কিছু খাবার আস্তো আস্তো বের হয় অর্থাৎ কিছু খাবার হজম হয়না যেটা খায় ওইটাই বের হয় 

ঔষধঃ Esb 30%, হেমিকো-পি,এইস, হাইড্রোজল স্যালাইন, এই ঔষধ গুলো খাওয়াতে হবে, প্রতি ১লিটার পানিতে ১গ্রাম করে পাউডার ও ১মিঃলিঃ করে লিকুইড মিশিয়ে দিনে ৬/৮ ঘন্টা খাওয়াতে হবে, এভাবে ৫/৭ দিন খাওয়াতে হবে 

Esb 30% রক্ত আমাশা দুর করে
হেমিকো-পি,এইসঃ সকল ব্যাকটেরিয়া দুকরে পি,এইস মান ঠিক রাখে
হাইড্রোজাল স্যালাইনঃ এটা হাস মুরগির স্যালাইন খুব দ্রুত হাঁস মুরগির দুর্বলতা কাটায় 


মুরগির রোগ ও ঔষধ

৪/ ফাউল পক্স 

ফাউল পক্স হলে হাস মুরগির নাকে মুখ ছোট ছোট গোটা ওঠে কিন্তু এগুলো বেসি বর হয় না পক্স হলে হাস মুরগির শরিরে জ্বর ও আসে 

ঔষধঃ ফাউল পক্স হলে নাপা, পটাসিয়াম ব্যাবহার করতে হবে, বাচ্চা হলে ১লিটার পানিতে ১টি নাপা ৪৫ দিনের বরো হলে ১টি নাপা বেঙ্গে ৮ টুকটা করে এক টুকরা করে খাওয়াতে হবে ও পটাসিয়াম হলকা পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করে গোটা গুলোতে লাগিয়ে দিতে হবে, 
পক্স জনিত প্রাণী কে মসা মাছি থেকে দুরে রাখতে হবে 

নাপাঃ জ্বর কমাতে সাহায্য করে 
পটাসিয়ামঃ  পক্সের গোটা ও ক্ষত সারিয়ে তোলে


মুরগির রোগ ও ঔষধ

৫/ রানীক্ষেত

রানীক্ষেত একটি মরন বেয়ধি রোগ এই রোগে আক্রান্ত হলে সারিয়ে তোলা কঠিন তাই সঠিক সময়ে রানীক্ষেত এর ভেকসিন করালে এই রোগটা আসে না, রানীক্ষেত হলে হাস মুরগির চুনা পায়খানা সাথে সবুজ পায়খানা হবে, হাস মুরগি ঝিমাবে।


ঔষধঃ এমফ্লোর ভেট, লিভো ম্যাক্স, হেমিকো-পি.এইস, হাইড্রজল স্যালাইন, এগুলো ফাওয়াতে হবে, ১লিটার পানিতে ১এমএল করে মিশিয়ে ৬/৮ ঘন্টা খাওয়াতে হবে এভাবে ৫/৭ দিন খাওয়াতে হবে 

এমফ্লোর ভেট, লিভো ম্যাক্স এন্টিবায়োটিক যা রানীক্ষেত এর ব্যাকটেরিয়া দুর করে 
হেমিকো-পি. এইস পি এইস মান ঠিক রাখে 
হাইড্রোজল স্যালাইন হাস মুরগির দুর্বলতা কাটায়


মুরগির রোগ ও ঔষধ

৬/ করাইজা

হাস মুরগির করাইজা হলে চোখ ফুলে উঠে চোখ থেকে পানি বের হয় চোখ বন্দো হয়ে যায় চোখের পাতায় ঘামাছির মতো ছোট ছোট গোটা উঠতে পারে সাথে ঠান্ডা ও লেগে যায় 

ঔষধঃ প্রথমে চোখ ভালোকরে পরিস্কার করতে হবে এর পরে যদি ড্রোপ ব্যাবহার করেন তবে সিপ্রো ডি ভেট চোখে ১ফোটা করে দিবেন সাথে ডক্সি-ভেট ১ লিটার পানিতে ১গ্রাম পাউডার মিশিয়ে খাওয়াতে হবে,  অথবা এটিভেট ও ডক্সি-ভেট ১লিটার পানিতে ১গ্রাম পাউডার মিশিয়ে খাওয়াতে হবে 

সিপ্রো ডি ভেট চোকের এন্টিবায়োটিক ড্রোপ
এটিভেট করাইজা দুর করে
ডক্সি-ভেট ঠান্ডা কমায়

মুরগির রোগ ও ঔষধ

৭/ গাম্বুরা

গাম্বুরা হলে হাস মুরগি ঝিমায় চুনা পায়খানা করে তবে গাম্বুরার চুনা পায়খানা পিছনে মল দারে লেগে থাকে এই রোগ টা গরমের সময় বেসি দেখা যায়, তাই গরমের তাপমাত্রা বেশি হলে ভিটামিন সি, স্যালাইন, এগুলো খাওয়াবেন তাহলে মুরগী সুস্থ থাকবে গাম্বরা রোগটি ইনশাআল্লাহ আসবে না 

ঔষধঃ যেহেতু এই রোগ গুলা গরমের সময় বেসি দেখা যায় তাই গরমের কারোনে গাম্বুরা হলে ফ্যান লাগিয়ে গরম দুর করুন, সিপ্রো-এ ভেট, হেমিকো পি.এইস, হাইড্রোজল, একি নিয়ম অনুসরে ১লিটার পানিতে ১এমএল করে ঔষধ মিশিয়ে ৬/৮ ঘন্টা খাওয়াতে হবে এভাবে ৫/৭ দিন খাওয়াতে হবে 

সিপ্রো-এ ভেট  গাম্বুরা ব্যাকটেরিয়া দুর করে 
হািড্রোজল দুর্বলতা কাটায়
হেমিকো পি এইস পি এইস মান ঠিক রাখে 

মুরগির রোগ ও ঔষধ

৮/ ফাউল কলেরা

ফাউল কলেরা হলেও হাস মুরগির নাকে মুখে গোটা বের হয় তবে ফাউল পক্স এর গোটা যতোটুকু ফাউল কলেরার গোটা তার থেকে অনেক বরো হয় ও সংখায় কম হয় ছবি গুলার দিকে খেয়াল কোরলে বুঝতে পারবেন 

ঔষধঃ রেনামাইসিন, মক্সিলিন সিভি ভেট,হাইড্রোজল, তিনটা একসাথে খাওয়াবেন ১লিটার পানিতে ১মিলি লিকুইড ও ১গ্রাম ১গ্রাম পাউডার মিশিয়ে ৬/৮ ঘন্টা খাওয়াতে হবে ৫/৭ দিন

রেনামাইসিম পয়জোন পায়খানা এর সাথে বের কোরে দিবে
মক্সিলিন সিভি ভেট কলেরার ব্যাকটেরিয়া দুরকরে গোটা কমাবে
হাইড্রোজল দুর্বলতা কাটাবে

মুরগির রোগ ও ঔষধ

৯/ প্যারালাইসিস

প্যারালাইসিস রোগ অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে আসতে পারে আবার ভিটামিন এর ঘার্তি থাকলেও হতে পারে তাই বাচ্চা থাকা কালিন ভিটা-৩, বা থায়াভিন এর ডোজ করিয়ে নিবেন ও প্রতি দের মাস পর পর এই ডোজ টি করাবেন, এখন কি কারোনে প্যারালাইসিস হলো সেটা আপনাকে বের কোরতে হবে, ঠান্ডার কারণে হলে প্রথমে ঠান্ডার ডোজ করাবেন উপরে বলা নিয়মে ও ভিটামিন ডোজ করাবেন একিসাথে, এটা গাম্বুরা হলেও আসে কারোন গাম্বুরা হলে শরিরে ভিটামিন এর ঘার্তি চলে আসে,  তখন গাম্বুরা ডোজ ও ভিটামিন ডোজ করাতে হবে, সকালে ঠান্ডা বা গাম্বুরার ঔষধ দিলেন ৬ঘন্টা পরে পানি পরিবর্তন করে সাদা পানি দিবেন আবার ৩ঘন্টা পরে ভিটা-৩ বা থায়াভিন দিবেন রাতে ঘুমানোর সময় সাদা পানি দিবেন।
আর যদি শুধু মাত্র ভিটামিন এর অভাবে হয়ে থাকে তবে শুধু ভিটামিন ডোজ করাতে হবে।  


ঔষধঃ ভিটা-৩ অথবা থায়াভিন ১লিটার পানিতে ১গ্রাম পাউডার মিশিয়ে খাওয়াতে হবে এভাবে ৫/৭ দিন খাওয়াতে হবে 

ভিটা-৩ / থায়াভিন এতে ভিটামিন বি-১ বি-২ ও বি-৬ রয়েছে যা দৌহিক বৃদ্ধি ও ভিটামিন এর ঘার্তি পূর্ণ করে 

১০/ ঝিমানো

ঝিমানো আসোলে কোন রোগ না যে-কোন রোগ হলে হাস মুরগির ঝিমায় তাই উপরে লিখিত আলামত দেখে খুজে বের কোরতে হবে কোন কারোনে ঝিমাচ্ছে, অনেকেই বলে থাকেন আমার হাঁস মুরগি কোন প্রকারের অসুখ নেই শুধু ঝিমায় এই কারণেই নাম্বার ১০ উল্লেখ করা  

বিঃ দ্রঃ আর্টিকেল লেখক বা পরামর্শদাতা কোন ডক্টর নয় sb city কোম্পানির একটি খামর রয়েছে যার নাম (পল্লী ফার্ম) পশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই খামারের পরিচর্যায় প্রাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা থেকে এই আর্টিকেলটি রেখ। 

1 Comments

  1. খুব উপকৃত হোলাম

    ReplyDelete
Previous Post Next Post